রবিনের বয়স সতের হতে সামান্য বাকী। হয়তো কোনদিক দিয়ে আঠারো এসে যাবে সে টেরই পাবে না। কারন সে এই সব বিষয়ে উদাসীন। একগুচ্ছ বইয়ের পাতায় আবদ্ধ থাকতে চায় না। কিন্তু তাকে যে মাধ্যমিক পরীক্ষায় এ প্লাস পেতেই হবে। এ প্লাস না পেলে তাকে কেউ ছাত্র বলে গুনবে না। আরো আছে পাশের বাসার আন্টি, অমুকের ননদের ছেলে, এর ছেলে, তমুকের ছেলে আরো কত কি! তবে এ প্লাস পাওয়ার জন্য তীব্র ইচ্ছা তার মধ্যে নেই। সে জানতে চায় সবকিছু। অনেক বড় বড় মানুষের বই পড়তে চায়। কিন্তু সে হয়তো কোনদিন লেখক কবি বা সাহিত্যিক হতে পারবে না, কারণ পাঠ্যবইয়ের বাইরে সামান্য পত্রিকাটুকু ও পড়তে মানা তার। তার একমাত্র কাজ পাঠ্যবইতে মুখ গুঁজে থাকা। কারণটা এ প্লাস। সে জানেনা তার বাইরের জগতকে। বলতে পারবে না ধান গাছ কেমন হয়। অথচ সে বাঙালী। মাছে ভাতে বাঙালী! ছোটবেলা থেকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা চালিয়ে আসছে সে। জানে না আমাদের বাংলাকে। আমাদের ঐতিহ্যকে। এতক্ষণ যার কথা বললাম তা ঢাকার চার দেয়ালের মাঝে বন্দী রবিনের জীবনাচরণ নিয়ে।
অন্যদিকে সমবয়সী মুনির পড়ে অজপাড়া গাঁয়ের এক কলেজে। তবে বাঙালী সাহিত্য নিয়ে তার ধারনা গগনচুম্বী। তবে সে জানে। তবে সে জানেনা ঢাকার পরিবেশ। কোনদিন যায়নি ঢাকাতে। আর তার হাতে ঢাকাকে জানার মত কোন মাধ্যম নেই। নেই স্মার্টফোন। সে তো প্রকৃত মাছে-ভাতে বাঙালী। তার মাথার উপর এ প্লাসের চাপ নেই। তার বাবা -মা অক্ষর জ্ঞানহীন। তারা শুধু জানেন পাশ ফেল কি!
১৭ বছর পরের ঘটনা। ঢাকার সেই রবিন এখন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে বেকার বসে আছে। আর গ্রামের সেই ছেলে মুনির আজ দেশের একজন প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক। ঢাকা মেডিকেল থেকে পাশ করে ঐ অবস্থানে সে। আজ ১৭ বছর পরে মুনির কোথায় আর রবিন কোথায়? রবিনের মত কত সম্ভাবনাময়ী ছাত্রের জীবন আজ অন্ধকারে তা সংখ্যায় অনেক। রবিনের শেষ পরিণতি কি হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে সে হতে পারত একজন কবি/সাহিত্যিক। তবে এটুকু জানি রবিন একজন পরাজিত সৈনিক। পরাজয়ের মুল সেই এ প্লাস…..
loading...
loading...
সহজ সরল ও নন্দিত ভাবে উপস্থাপন ।
loading...
ধন্যবাদ ভাই
loading...
… 'এটুকু জানি রবিন একজন পরাজিত সৈনিক। পরাজয়ের মুল সেই এ প্লাস …'
loading...
loading...